1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সৈনিকদের ব্লগ নিয়ে বিপাকে প্রশাসন

রিয়াজুল ইসলাম২৭ আগস্ট ২০০৮

ইন্টারনেটে ব্লগ লেখার জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়ে চলেছে৷ যে কেউ তার নিজের মত করে লিখতে পারে ব্লগে৷ কিন্তু এই ব্লগ নিয়েই বেশ সমস্যায় রয়েছে পশ্চিমা অনেক দেশ৷

https://p.dw.com/p/F5nS
সৈনিকদের ব্লগিং (ফাইল ফটো)ছবি: picture-alliance / dpa

বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ যেসব দেশের সেনা সদস্যরা আফগানিস্তান ও ইরাকে মোতায়েন রয়েছে তারা ইন্টারনেটে ব্লগ লিখতে গিয়ে অনেক সময় বেকায়দায় ফেলছে প্রশাসনকে৷

নিজের কথা বলতে গিয়ে অনেক সময় তারা প্রকাশ করে ফেলছে এমন সব তথ্য যা সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন গোপন বিষয় সম্পর্কিত৷ অনেক সময় এই সেনাদের প্রকাশিত অনুভুতির কথা চলে যাচ্ছে নিজ দেশের সামরিক নীতির বিরুদ্ধে৷

Soldaten vor dem Computer
আফগানিস্তানে কর্মরত মার্কিন সৈনিকরা ব্লগ লিখছেছবি: picture-alliance / dpa

যেমনটি কয়েকদিন আগে ঘটেছিলো৷ কোলবি বাজেল নামে একটি ব্লগে মার্কিন এক সেনা লিখেছিলেন মাই ওয়ার কিলিং টাইম ইন ইরাক নামে একটি লেখা৷ অসাধারণ এ লেখায় ফুটে উঠেছিলো ইরাক যুদ্ধে সাধারণ মানুষের মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞের কথা৷ অল্প সময়ের মধ্যে খুব জনপ্রিয় হয়ে পড়া এ লেখাটি সাতটি ভাষায় ছড়িয়ে দেয়া হয় ইন্টারনেটে৷ পরবর্তীতে এটি সেরা ব্লগের পুরষ্কারও লাভ করে৷

কিন্তু মার্কিন প্রশাসন ভালোভাবে নিতে পারেনি বিষয়টি৷ তাই গত বছর মার্কিন সামরিক বাহিনী ঘোষণা দেয় যে মার্কিন সেনা সদস্যদরা ইন্টারনেটে যেসব লেখা, ছবি কিংবা ভিডিও পাঠাবে সেগুলো এখন থেকে চেক করে দেখা হবে৷ একইসঙ্গে তারা কোলবি বাজেল নামে ওই ওয়েব সাইটটিও মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে নিষিদ্ধ করে৷ উল্লেখ্য, মাইব্লগিং ডট কম নামে একটি ওয়েবসাইটে ৩৮ টি দেশের দুই হাজারেরও বেশী সেনা সদস্য ব্লগ লিখেছে৷ এদের মধ্যে বেশীরভাগই মার্কিন সেনাবাহিনীর৷ এছাড়া জার্মান সেনাবাহিনীরও একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সেনা সদস্য ব্লগ লিখে থাকে৷

স্বাভাবিক ভাবেই জানতে ইচ্ছা করে কি ধরনের লেখা লিখে থাকে সেনা সদস্যরা৷ আফগানিস্তানে কর্মরত এক সেনা সদস্য লিখেছেন, আমি অপেক্ষা করছি কখন সময় পার হবে৷ যখন আমি বাড়ি ফিরে যাবো তখন আমাদের অনেকের পরিবার কিংবা বন্ধুরা কি মনে করবে? কারণ নির্দেশ পালন করতে গিয়ে আমরা ঠান্ডা মাথায় মানুষ মেরেছি৷

এরকম লেখা ছাড়াও ব্লগে পাঠানো সেনাদের বিভিন্ন ছবিও মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমা বিশ্বের সামরিক বাহিনীর জন্য৷ কারণ এসব ছবি সামরিক বাহিনীর গোপনীয় অনেক বিষয় কিংবা সেনা সদস্যদের অবস্থান ফাঁস করে দিতে পারে৷ সেনা কর্মকর্তাদের আশংকা, ইন্টারনেটে সেনা সদস্যদের ছবি দেখে অনেক সন্ত্রাসী গ্রুপ তাদেরকে ও তাদের পরিবারের সদস্যদের টার্গেট করে ফেলতে পারে৷

এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে গত জুলাইয়ে ফ্রান্সের সেনা প্রধান এলরিক ইরাসতোরজা একটি নির্দেশও জারি করেছিলেন৷ তবে এরপরও সেনা সদস্যদের ব্লগ লেখা থেকে বিরত রাখা সম্ভব নয় বলেই মনে করেন জার্মান সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ক্রিস্টিয়ান ডিনস্ট৷ তবে তিনি নিরাপত্তার খাতিরে সেনা সদস্যদের আসল নাম ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, অনেক সময় দেখা যায় যিনি ব্লগ লিখছেন তিনি হয়তো ঘটনার পুরো বিষয়টি জানেন না৷ ফলে এসব লেখা অনেক সময় রাজনৈতিকভাবেও ব্যবহার হতে দেখা যায় বলে মনে করেন ক্রিস্টিয়ান ডিনস্ট৷ তবে সেনা সদস্যদের এসব ব্লগ তাদের মনমানসিকতা বুঝতেও সহায়তা করে সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকদের৷